চাঁপাই সংবাদ ডটকম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়ীয়া ইউনিয়নের বড় জামবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলা অফিস কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ ঐ স্কুলের কথিত দপ্তরিকে আটক করেছেন স্থানীয় জনতা।
২৩ এপ্রিল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সরজমিন গিয়ে স্থানীয় ও স্কুল সূত্রে জানা যায়, বড় জামবাড়ীযা গ্রামের মোঃ শহিদুল ইসলাম পটুর ছেলে মোঃ আব্দুল কাদের জিলানি(২৭) বড় জামবাড়ীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৬ সাল থেকে কোন প্রকার নিয়োগপত্র ছাড়াই দপ্তরির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ সুবাদে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ তোহমিনা খাতুন স্কুলের সকল প্রকার চাবি তার কাছে তুলে দেন। চাবি পেয়ে স্কুলের দ্বিতীয় তলা অফিস কক্ষে সে সময় থেকে বিভিন্ন নারী নিয়ে আপত্তিকর কাজে লিপ্ত থাকেন জিলানি।
দীর্ঘদিন ধরে কলেজ শিক্ষার্থী উত্তরপাড়ার মোঃ হেলাল অরেফে হেলুর মেয়েকে ঐ স্কুলের ছাত্রী থাকা অবস্থায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুলের অফিস কক্ষে একাধীক বার আপত্তিকর সম্পর্ক স্থাপন করে আসতে থাকেন জিলানি। এরি ধারাবাহিকতায় ২৩ এপ্রিল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় স্কুলের অফিস কক্ষে কলেজ শিক্ষার্থীকে ডেকে আপত্তিকর সম্পর্ক স্থাপনে জড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা জানতে পেরে তাঁদের হাতেনাতে আটক করেন।
এঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এনিয়ে এদিন স্থানীয় ভাবে মিমাংশার দেনদরবার হলেও জটিলতার কারণে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি এলাকাবাসি। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ আফজউদ্দিন পানু মিয়া, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গাফ্ফার ঘটনাস্থলে যান। এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন, একজন কথিত দপ্তরির হাতে প্রধান শিক্ষক স্কুলের সকল চাবি দিয়ে রাখায় দীর্ঘদিন ধরে এ দপ্তরি নারী সংক্রান্ত অপরাধ করে আসছেন। তাঁর কোন বৈধ্য নিয়োগ না থাকার পরেও তাঁর কাছে স্কুলের চাবি থাকায় স্কুলের সকল সম্পদ কি করে নিরাপদ এ নিয়েও এলাকাবাসির প্রশ্ন উঠেছে। এ সবের প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসির পক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, আমার সাথে গত ৭ বছর ধরে জিলানি প্রেমের সম্পর্ক গড়েছেন। স্কুলের অফিস কক্ষে ডেকে অনেক বার আপত্তিকর সম্পর্ক গড়েছেন। আমার প্রায় দেড় বছর পূর্বে অন্যত্রে বিয়ে হলেও সেখান থেকে তালাক করে নিয়ে আসেন। গত রোববার দুপুরে অফিস কক্ষে ডেকে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয় জনতা আমাদের দুজনকে আটক করেন বলে নিশ্চিত করেন।
এব্যাপারে জিলানিকে না পেয়ে তাঁর ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি। পরে তাঁর পিতার সাথে যোগাযোগ করলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
জামবাড়ীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আফাজউদ্দিন পানু মিয়া বলেন, বিষয়টি শুনার পর ঘটনাস্থলে গেলে সত্যতা পায়। তাঁর ব্যাপারে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন স্কুলের ১০/১২ বছর বয়সের মেয়ে শিক্ষার্থীরা তাঁর খারাপ আচরণে ভীষণ ভয় পায়।
প্রধান শিক্ষক মোসাঃ তোহমিনা খাতুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং বলেন ওর নিকট থেকে ঘটনার পর চাবি নিয়ে নেয়া হয়েছে।
স্কুল সভাপতি মোঃ গোলাম নবী বলেন, জিলানিকে কি ভাবে রাখা হয়েছে আমি জানতাম না। আমি রোজার আগে সভাপতি হয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গাফ্ফার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। চাবি দেয়া ঠিক হয়নি। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাবসুম বলেন, সোমবার এ ব্যাপারে এলাকাবাসির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য এ ঘটনার বিচারের দাবীতে স্কুল চত্বরে সোমবার বিকেলে মানববন্ধেনের আয়োজন করেন এলাকাবাসি।
© All rights reserved © 2021 Chapai Sangbad